Use APKPure App
Get পরিবার ও সমাজ old version APK for Android
परिवार और समाज
আপনার সন্তান থেকে আপনি কী চান?
গাজিপুর থেকে ঢাকা ফিরছিলাম। বাসে উঠে বসলাম। কিছুক্ষন পর এক মুরব্বী উঠে আমার পাশেই বসলেন। আমি সালাম দিলাম। স্নিগ্ধ কোমল চেহারা। শ্বেত-শুভ্র লম্বা দাড়ি। দেখলেই শ্রদ্ধা করতে ইচ্ছা করে। বয়সের ভারে বেশ ন্যুজ বোঝা যায়। যেন জোর করেই লুকোনোর চেষ্টা। কালো প্যান্ট সাদা শার্ট পরা। ইন করা। হাতে একটি এক্সিকিউটিভ ফাইল। কাগজ-পত্র ভরা।
কিছুক্ষন পর তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, বাবা আপনার নাম? নাম বললাম। জিজ্ঞেস করলেন কী করেন? সংক্ষেপে বললাম। জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় থাকেন। বললাম। জানতে চাইলেন বাসায় কে কে আছে।
বললাম, আলহামদু লিল্লাহ সবাই আছে। বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে।
প্রশ্ন করলেন, ছেলে মেয়ে ক’টা? বললাম, আলহামদু লিল্লাহ আমার মোট ছয় ছেলে-মেয়ে। চারটা ছোট, আর দু’জন বড়।
মনে হয় তিনি পুরো কথাটা ধরতে পারেননি। বললেন, কী বলছেন?
বললাম, হ্যা চাচা, আমার নিজের চার ছেলে-মেয়ে। দুই মেয়ে, দুই ছেলে। আর বুড়ো দুই সন্তান হলেন আমার বাবা মা।
জিজ্ঞেস করলেন, বাবা মা কি আপনার সাথেই থাকেন?
বললাম, সব সময় থাকেন না। মানুষের ভীড়ে ঢাকা শহরে বাবার না কি দম বন্ধ হয়ে আসে। উনি গ্রামেই থাকতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। তাই বাবা মা গ্রামেই থাকেন। কিন্তু নাতীদের টানে আবার গ্রামেও তাদের মন টেকে না। তাই এখন এখানেই আছেন। সারাক্ষন নাতী-নাতনীদের নিয়ে থাকেন। দেখছি, এখানেই ওনারা বেশ আনন্দে আছেন আলহামদু লিল্লাহ। তাই আমিও ওনাদেরকে আর গ্রামে যেতে দিতে চাই না। মাঝে-মধ্যে গ্রামের বাড়িঘর, জায়গা-জমি দেখা শোনার জন্য গিয়ে কিছু দিন থেকে আবার চলে আসবেন।
বললাম, চাচা আপনি আমার বাবার চেয়েও বয়সে অনেক বড় হবেন মনে হয়। আমাকে তুমি করে বলেন। আপনার মুখে ‘আপনি’ করে শুনতে আমার আন-ইজি লাগছে।
বললেন, আচ্ছা আচ্ছা, থ্যাংক ইউ।
কথা বলতে বেশ ভালোই লাগছিলো ভদ্রলোকের সাথে। দেখলাম, উনি আর কিছু জিজ্ঞেস করছেন না। অগত্যা আমিই জানতে চাইলাম ওনার কথা। কী করেন, ছেলে-মেয়ে ক’টা, কী করে ইত্যাদি।
ছেলে-মেয়েদের কথা বললেন। বড় ছেলে ইঞ্জিনিয়ার, অ্যামেরিকাতে থাকে। মেঝ ছেলে এই দেশেরই একজন উপ-সচিব। এর পর তার আরেকটি মেয়েও আছে। সে যুক্তরাজ্যে স্বামীর সাথে থাকে; সেখানকার নাম করা একটি কলেজের শিক্ষক। তিনি নিজে একটি সি.এ ফার্মে অ্যাকাউন্টেন্ট হিসেবে কাজ করেন।
এরপর কিছুক্ষন নিরবে কেটে গেলো। আমি মনে হয় অন্য কিছু চিন্তা করছিলাম, না যেন ফোনে কথা বলছিলাম। হঠাৎ ফিরে দেখলাম ভদ্রলোক চোখ মুছছেন। পানি বেয়ে পড়ছে গণ্ড বেয়ে। আমি ভাবলাম, শরীরে কোনো আঘাত-টাঘাত পেয়েছেন হয়তো। বললাম, চাচা কী হয়েছে? বললেন, কিছু না বাবা।
আমি বেশ অপ্রস্তুত হয়ে পড়লাম। কী করবো, কী বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। বললাম, চাচা কিছু মনে না করলে আমাকে বলুন কী হয়েছে? কিছুক্ষণ হাতের রুমালে চোখ চেপে রেখে, কী হয়েছে সেটা না বলে তিনি বললেন, ‘তোমার বাবা-মা সত্যিই সৌভাগ্যবান’।
বললাম, আলহামদু লিল্লাহ। দোয়া করবেন, যেন আজীবন ওনাদের খিদমত করে যেতে পারি।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, চাচা আপনার এই বয়সে এভাবে বাসে দৌড়-ঝাপ করে চলাফেরা করতে কষ্ট হয় না? কেনই বা করেন? আপনার ছেলে-মেয়েরা তো সব সুপ্রতিষ্ঠিত, স্বচ্ছল!
বললেন, কষ্ট তো হয়ই বাবা, কিন্তু না করেও তো উপায় নেই!
বললাম, কেন, আপনার সন্তানরা…?
বললেন, তাদের সময় নেই খোজ খবর নেওয়ার। তারা তাদের নিজেদের জীবন-ক্যারিয়ার নিয়ে এতো ব্যাস্ত যে সময়ই পায় না। টাকা-পয়সাও পাঠায় না। আমার তো স্ত্রী আছে। আমার ও তার জীবনধারণের জন্য হলেও আমাকে এই বয়সে চাকুরি করতে হচ্ছে। ছেলে-মেয়েরা বলে, আমি বসে থাকলে নাকি অসুস্থ অচল হয়ে পড়বো, ডায়াবেটিক প্রেসারে আক্রান্ত হবো। অতএব আমার খেটে খাওয়া উচিৎ।
Last updated on Jul 18, 2017
Minor bug fixes and improvements. Install or update to the newest version to check it out!
द्वारा डाली गई
Khaled Waleed
Android ज़रूरी है
Android 4.0.3+
श्रेणी
रिपोर्ट
পরিবার ও সমাজ
1.0 by Md Mamunur Rasid
Jul 18, 2017